শঙ্খ
তোমার শঙ্খ ধূলায় পড়ে , কেমন করে সইব !
বাতাস আলো গেল মরে , একি রে দুর্দৈব !
লড়বি কে আয় ধ্বজা বেয়ে , গান আছে যার ওঠ না গেয়ে ,
চলবি যারা চলরে ধেয়ে ---- আয় না রে নিঃশঙ্ক ।
ধূলায় পড়ে রইল চেয়ে ওই যে অভয় শঙ্খ ।।
চলেছিলাম পূজার ঘরে সাজিয়ে ফুলের অর্ঘ্য
খুঁজি সারা দিনের পরে কোথায় শান্তিস্বর্গ ।
এবার আমার হৃদয়ক্ষত ভেবেছিলেম হবে গত ,
ধুয়ে মলিন চিহ্ণ যত হব নিষ্কলঙ্ক ।
পথে দেখি ধূলায় নত তোমার মহাশঙ্খ ।।
আরতিদীপ এই কি জ্বালা , এই কি আমার সন্ধ্যা ?
গাঁথব রক্তজবার মালা ? হায় রজনীগন্ধা !
ভেবেছিলাম যোঝাযুঝি মিটিয়ে পাব বিরাম খুঁজি ,
চুকিয়ে দিয়ে ঋণের পুঁজি লব তোমার অঙ্ক ।
হেনকালে ডাকল বুঝি নীরব তব শঙ্খ ।।
যৌবনেরই পরশমণি করাও তবে স্পর্শ ।
দীপক তানে উঠুক ধ্বনি দীপ্ত প্রাণের হর্ষ ।
নিশার বক্ষ বিদার করে উদ্ বোধনে গগন ভরে
অন্ধ দিকে দিগন্তরে জাগাও না আতঙ্ক ।
দুই হাতে আজ তুলব ধরে তোমার জয়শঙ্খ ।।
জানি জানি তন্দ্রা মম রইবে না আর চক্ষে ।
জানি শ্রাবণ-ধারাসম বাণ বাজিছে বক্ষে ।
কেউ বা ছুটে আসবে পাশে , কাঁদবে বা কেউ দীর্ঘশ্বাসে ,
দুঃস্বপনে কাঁপবে ত্রাসে সুপ্তির পর্যঙ্ক ।
বাজবে যে আজ মহোল্লাসে তোমার মহাশঙ্খ ।।
তোমার কাছে আরাম চেয়ে পেলেম শুধু লজ্জা ।এবার সকল অঙ্গ ছেয়ে পড়াও রণসজ্জা ।
ব্যাঘাত আসুক নব নব --- আঘাত খেয়ে অচল রব ,
বক্ষে আমার দুঃখে তব বাজবে জয়ডঙ্ক ।
দেব সকল শক্তি , লব অভয় তব শঙ্খ ।।